
চোখ রাঙ্গানো মাও-বনে কলকাতা রাইডারস…………
যদি রবিঠাকুরের দু-চাকা থাকতো তাহলে বোধ হয় লিখতেন “দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া…ঘরের বাইরে “দু-চাকা” ফেলিয়া” !! এই কনসেপ্টকে পাথেয় করে ঠিক হয় কাছাকাছি কোথাও যাওয়া যাক এবার । কারন বাহিরকে কাছে আনার নেশায় আমরা অনেকটাই সফল । অনেকটা সেই ছোটবেলায় করা ভাবসম্প্রসারণের মত “দূরকে করেছি নিকট বন্ধু, পরকে করেছি ভাই” !! কিন্তু ঘরেই কত কিছু রয়েছে সেটা অনাবিষ্কৃত থাকবে, সেটা নিজেদের মানতে কষ্ট হচ্ছিল । তাই আমরা কলকাতা রাইডারের কয়েকজন ঠিক করি চল ঘুরিয়ে আনি নিজেকে । তাই পড়ে পাওয়া ১৪ আনার মত বড় দিনের ছুটি আর তার লেজুড় হিসেবে অবশ্যই ব্যস্ততার চোখ ফাঁকি দিয়ে একটা শনিবার নিয়ে বেরিয়ে পড়ি ক’জনে ঝাড়গ্রাম । কি দেখবো কিভাবে দেখবো সে ব্যাপারের আলোচনা যাচ্ছিনা । কারন আমাদের মাথায় তখন ছিল কি – “যেতে পারি যেকোন দিকেই আমি যেতে পারি…কিন্তু কেন যাব ??
তবে যাবার পথে কি হল/কেমন করে হল সে সব বলবো, আমার দৃষ্টিতে । কারন আমি একদম আনাড়ি একজন সদস্য । না পারি ড্রাইভ করতে না পারি কিছু । পেছনে বসে থাকা ছাড়া আমি একদমই বে-গুন !! তাহলে আমি কেন এখানে এই বাইকারদের ভিড়ে ??? প্রশ্নটার উত্তর জানিনা কি দেবো ?? কিন্তু আমিও কলকাতা রাইডারের অ্যাক্টিভ সদস্যদের মত প্রকৃতি আর গতিময়তা দুটোই ভালবাসি । আর ভালবাসি নতুন নতুন মানুষের সাথে মিশতে। এটা আমার কাছে একটা অ্যাডভেঞ্চার… নিখোঁজ “মানুষ” খোঁজা । যা আজকাল খুব দুর্লভ ! পছন্দ না হলে আমি ভাঙ্গি না আমাকে, অনেকে জানে সেটা ।
যা বলছিলাম…
কলকাতা পৌরসভা প্রায়ই বিভিন্ন সেলেবদের দিয়ে বলায় “জমা জলে জীবাণু জমে, যা বেশ হানীকারক” । আমারও তাই মনে হয় “গতিময়তাই শুচি বা স্বাস্থ্যকর” । আর এটাই কলকাতা রাইডারের ইউএসপি !!নামধাম পরিচয় নাই বা দিলাম । শুধু কিছু নাম বলবো । যাদের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্যের ঝিলিক আমরা বেশ কয়েকজন যারা একদম নতুন (আমার তো এখনও হাতেখড়িও হয় নি ড্রাইভিং এর) তারা মনে রাখবে হয়তো বহুদিন ।
এবার ঘটনায় আসি…। অবশ্যই তার আগে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে নেয়ার পালা । প্রথমেই আমার বন্ধুর নামটা বলবো । ও যদি না বলতো “ কি রে যাবি দুদিনের জন্য বাইকে ?” !!তাহলে একদল দামাল বাইকারদের দেখা মিলতো কি ?? নাম হল প্রতীক যে সমগ্র পথ আমায় বয়ে বেরিয়েছে । মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে কার্পণ্য করি না আমি । তাই কৃতজ্ঞতা জানাই কলকাতা রাইডারকে । যারা একদম অচেনা একজনকে আপন করে নিয়েছে বিনা প্রশ্নে । হাত বাড়িয়ে প্রথমেই পরিচয় করে নিয়েছে যে ক’টা নাম “সৌমেন,মোসাট, সালাউদ্দিন,সায়ন,রোহণ , রিক্,সাদ্দাম বড়ুয়াদা ,প্রসেনজিত, দেবুদা, স্যান্ডিদা জাম্বো আরও বেশ ক’জন । আর একজনের নাম যিনি থেকেও প্রবল ভাবে ছিলেন,বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মুখে যার নাম ঘুরে ফিরে এসেছে ,যাকে আমি দেখিনি এখনও । তিনি প্রসাদদা (আলাপের ইচ্ছে থাকবে অবশ্যই ) !
সাধারণত কি হয় When you try to know an individual, you go through his/her passion !! এভাবেই আমি আমার বন্ধু প্রতীককে নতুন ভাবে চিনলাম !! এটাও একটা আবিষ্কার । কারন একজন মানুষের অনেক গুলো লেয়ার বা স্তর থাকে । আমি একটা জায়গায় আটকে যাচ্ছিলাম ওকে চেনার ব্যাপারে । অনেকটা, ব্যাঞ্জনে দরকারি পেঁয়াজের মত । এক একটা স্তরে আমি পাচ্ছিলাম এক একজন প্রতীককে । সেটা উপলব্ধি করলাম নতুন করে!! জ্যোতিকেও নতুন করে পাই যখন দুজনে পাখী খুঁজতে বের হই খুব ভোরে…ছবি তুলি !! এই জ্যোতির মাঝেও নতুন এক জ্যোতি খুঁজে পাই যাকে আমি চিনতে পারিনি এতদিন থেকেও ।আবার দুজনে ফন্দি আটি একসাথে যে সামনের ফেব্রুয়ারিতে যাব সিমলিপাল ফরেস্টে ।
কিভাবে গেলাম, কোথায় দাঁড়ালাম । কত গতি ছিল কত কিছু । এসব নিয়ে আমার বন্ধুরা বলবে । কারন ওরা প্রত্যেকেই রাস্তার ব্যাপারী । আর আমি অনেকটা সেই গানের কলির মত যে “ পথ হারাবো বলেই এবার পথে নেমেছি”র ছন্দে কাটিয়েছি সারাক্ষণ (দেবুদা,সুব্রত ,সায়ন,প্রতীক আর প্রসেন আমি গানের শ্রোতামাত্র…গান শুনতে ভালবাসি ! প্রতীক গা…… মত আমাকে “তুম দিল কি ধরকন”এর অভিজিত করে দিচ্ছিল আরেকটু হলেই
।) !! বোহেমিয়ান হবার ইচ্ছেটা সাংঘাতিক । আমি নিয়ন্ত্রিত বোহেমিয়ান !
“পথ এবং পথিক” এই দুটো ব্যাপারে আমার দুরকম অবস্থান । যেমন পথকে দেখি কিন্তু গন্তব্য দেখিনা সাধারণত । তাই আমাকে সবাই কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, সেটা জোরালো নয় । আমি পথের চার পাশটা দেখতে চাই সব সময় !! আর পথিক—এটা একটা চমৎকার বিষয় । পথ একই হলেও পথিক কিন্তু একেক জন একেক রকমের হয়ে থাকে ! এই বৈশিষ্টকে দেখতে ভাল লাগে কাছ থেকে ।
কথায় কথায় অনেকটা চলে গেছি এবার ফিরি ঘটনায়…
শিলাজিতের একটা গান ছিল না “লাল মাটির সরানে… সত্যি ঝাড়গ্রামের মাটির রংটাই যথেষ্ট রাঙ্গিয়ে দেয়ার জন্য। অসম্ভব সপ্রতিভ লাগছিল এই লাল মাটির গালিচা । সবুজের বুকে উঁকি দেয়া লাল মাটি অন্যরকম দৃশ্য সুখ দিচ্ছিল আমাদের !!
আমরা বেলপাহাড়ির বিডিওর অফিস গ্রাউন্ডেই ছিলাম । ১৭ টা বাইকের নিরাপদ ঘুমের ব্যবস্থা করে যখন উপরে উঠছি । তখন কে যেন বলে “ আমরা খুব নিরাপদ জায়গায় আছি” । তখন মনে পড়লো আমরা মাওবাদীদের কোলে বসে আছি ।
এখানে প্রতিটি সরল প্রান্তিক মানুষ গুলো প্রবল বিস্ময়ে চেয়ে আছে আমাদের এই বাইকের সারির দিকে । তাদের আশ্চর্য করছে বাইকারদের সমতা । অনেকের ঠোঁটের সাথে চোখ মিল খুঁজছে । আসলে ওরা আমাদের বাইক গুলোকে গুনছে… গুনে গুনে ১৭ অব্দি গিয়ে থামছে ওদের চোখ । কেননা মানুষ যখন সহজ ভাবে কিছু দেখে তখন মানুষের মনের কথা পড়া যায় !!
প্রথমেই আলাপ হল টিকে মাহাতো । যিনি আমাদের দেখা শোনার ভার নিয়েছেন । একদম সাদাটে মানুষ । অনেক সময় কিছু মানুষের নিরীহতা ফুটে ওঠে চোখে । কিছুটা অসহায় চোখের মনি । পড়ে আমরা জানলাম তার অসহায়তার পাঁচকাহন ! উনি চেষ্টা করেছেন আমাদেরকে ভাল রাখার । আমাদের তাতে খেদ নেই । মিহি ঠান্ডা চারপাশে । লাল মাটিতে রাঙ্গিয়ে উঠেছে আপাদমস্তক । মন তার মধ্যে যুক্ত তো বটেই । আমরা সবাই এক ঘরে বসে নানা আড্ডা খুনসুটি । যা আমাদের ঘনিষ্টতাকে উস্কে দিচ্ছে ঘ্ন্টায় ঘণ্টায় !! অসাধারণ চাঁদ “ঝলসানো রুটি” হয়ে তখন পৃথিবীর থালায় । আমরা সবে গতিময়তা ছেড়ে থিতু হতে চাইছি । তখন মোসাট গাড়িকে ঘুমোতে বলে আমাকে বলল “ দাদা চাঁদটা দেখো??” । ভাল লেগে গেল মানুষটাকে সাথে সাথেই । পেছনে স্বামী স্ত্রীর খুনসুটি শোনা গেল । আমরা ক’জন না তাকিয়েই বুঝে গেলাম “দেবুদা আর জ্যোতি” । এই দুজনের পেছনে সবাই কম বেশী লেগেছে ।আমি সাহস পেয়ে মজা করতে থাকলাম । ভীষণ আন্তরিক ভাবে গ্রহণ করলেন প্রতিটি শব্দ দেবুদা । পরিবেশটা তখন পুরো মাত্রায় বাসর জাগার আনন্দ !! মিটি মিটি হাসছে দূরে বসে থাকা বড়ুয়াদা । স্যান্ডিদা তার ঝুলি থেকে একের পর এক অভিজ্ঞতা শোনাচ্ছে । আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছি যেভাবে আমি শুনছিলাম প্রসেনজিতের কথাও । ছেলেটা খুব আবেগ দিয়ে বলে যাই বলে যতটা বলে ।
সুব্রত বলতে শুরু করলে, সমস্যা একটাই । ওর কথা আগে শুনতে হবে । পাশে বসে আছে আমাদের থেকে খুব ছোট একজন, নাম সায়ন । ওর কাজ ছিল সবাইয়ের কান্ড দেখে হাসা । আর প্রসেন তখন এক ব্রিলিয়ান্ট পেটুক আর খাই খাই গোছের রাঁধুনে হয়ে উঠছে । সুব্রত তো পারলে তখনই ঝাড়গ্রামের বনে শুয়োর খুঁজতে যায় প্রসেনের হাতের রান্না খাবে বলে । কি অনায়াসে সবাইকে বলছে প্রসেন “তোরা আমাকে একটা ফোন করবি আগের দিন । আমি তোদের এই এই জায়গায় খাওয়াবো !!” এই ধরণের কথা অনেক দিন কেউ বলে না কোন সদ্য চেনা মানুষকে !!
কাছে বসে দ্রবীভূত প্রতীক,স্যান্ডিদা,দেবুদা আর মাহাতোদা,সাদ্দাম সহ বেশ ক’জন । একটা ঘরে ২৩-২৪জন । মানুষের হৈ হুল্লুরে জেগে উঠছে আপাত গম্ভীর বিডিওর ফাইল পত্র গুলো !!
মানুষ যখন তার শখ-ইচ্ছা নিয়ে বলে তখন দেখবে সে সুন্দর হতে শুরু করে । চারপাশে তখন নানান জায়গার জল গঙ্গায় মিশচ্ছে । কাউকে আলাদা করা যাচ্ছেনা । সবাই একাত্ম হয়ে আড্ডা দিচ্ছি । কেউ কার খাবার খেয়ে নিচ্ছে, কেউ এগিয়ে দিচ্ছে তার ক্রিম, কেউ এগিয়ে দিচ্ছে ঔষধ । সেই “মিলাবে মিলিবে” থিওরি । হঠাৎ সৌমেনের গলায় “জয়্ত তারা” । আমি তো হেসে ফেলেছি । আর সৌমেন হেসে বলছে “ আমার মেয়ে এভাবেই বলে মাঝে মাঝে” !! ভাল লাগলো ওর আন্তরিক কিছু কথা । শুনলাম বেশ কিছু আধ্যাত্মিক কথা । আমি খেঁপালাম “তোর বাণী কবে বেরুবে বই নিয়ে” !! হাসলাম চারজনে ।
এবার আসি ঘোরা ঘুরিতে । যেটা আল্টিম্যাট্ !!
@@ কনক দুর্গা মন্দির—
এই মন্দিরটা নিয়ে আমি জেনেছিলাম আগেই এক বইতে । চিল্কিগড় বনাঞ্চলের ধারে এই মন্দির । এই বনাঞ্চলে প্রচুর ভেষজ উদ্ভিদের অবস্থান আমরা সমগ্র যাত্রা পথে লক্ষ্য করেছি । নানা রকমের গাছ… নাম জিগ্যেস করে লজ্জা দিবেন না !! শুকিয়ে যাওয়া ডুলুং নদীর দক্ষিণে দাঁড়িয়ে আছে এই সুপ্রাচীন মন্দির । ঝাড়গ্রাম থেকে মাত্র ১২ কিমি ! মন্দির টার প্রবেশদ্বার টা দারুন । মাঝে শিব বসে আছে যেন পাহারায় !! মন্দিরটি নির্মিত হয় সামন্ত রাজাদের আমলে । কনক মানে সোনা, তাই মন্দিরের বিগ্রহ সোনার তাতো বুঝে গ্যাছ আশা করি এতক্ষণে । আমাদের কপাল ভাল । ওখানে আমরা পেলাম উপজাতিদের সেই রিদ্মিক ড্যান্স আর তাকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছে মিহি সুরে বাজা ডাকাতিয়া বাঁশি আর দ্রিম দ্রিম গম্ভীর যুদ্ধজয়ী বাদ্য । মন্দিরে ঢুকে চরণামৃত পেলাম বিনা কষ্টে। তারপর আবার প্রতীকের পিঠে । সময়ের প্রতি সজাগ সবার দৃষ্টি।
@@শালবনি ……
নামই তো বলে দিচ্ছে এখানে শাল বন । অসম্ভব শান্ত আর গাছেরা হাত ধরে দাঁড়িয়ে যেন সমবেত সঙ্গীতের জন্য প্রস্তুত । প্রচন্ড ঠাণ্ডা ওই বন । একটা মৃদু আহবান পাওয়া যাচ্ছে অরণ্যের । যাকে কলকাতা রাইডার এড়িয়ে যেতে পারে নি । ঢুকে পড়েছিলাম বনের শান্তিকে ভঙ্গ না করে । যে জায়গার নিস্তব্ধতা আমাদের টানছিল সেখানেই সবাই দাঁড়িয়ে পড়ছিলাম । “পিক্ তো বান্তা হ্যায় বস্” । আমরা কৃতজ্ঞ ছিলাম সবাই ওই নিস্তবদ্ধতা আর প্রকৃতির প্রতি । তাই অনুভব করলাম অনেক কিছু । অনেকের মাথায় এসেছিল “এখানে থেকে গেলে হয় না” !!
@@ বেলপাহাড়ি…
এক বেঞ্চে বসা নার্সারী ক্লাসেই দুরন্ত বন্ধুদের মত তাকিয়ে আছে পাহাড়ের সারি একটু দূরে দূরে । তাকিয়ে দেখার মত সেই সব পাহাড় । পাশে বয়ে যাচ্ছে উচ্ছল তরুণীর মত তারাফেনি নদী । প্রতিটা লোভনীয় বাঁকে দারুন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছিল রাইডাররা । প্রতীক আর আমি চারপাশ দেখতে দেখতে যাচ্ছিলাম । তবে প্রতীক রাখালের ভূমিকায়… তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিল রাইডার-পালেদের । এতগুলো বাইকের সারির দিকে তাকালেই দৃশ্যসুখ পাওয়া যাচ্ছিল ।
@@ ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ী……
রাজা নরসিংহদেব বাহাদুর ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে এই সুবিশাল রাজকীয় প্রাসাদ তৈরি করেন । অনেকটা সুলতানী স্টাইলের প্রাসাদ । শুরুতে সিংহ দুয়ার । বিরাট লাল মাটির লন । যত্নের ছাপ স্পষ্ট চারপাশে । নাট মন্দিরে অনেক মূর্তি । রাধাকৃষ্ণ,বিষ্ণু , গরুড় দেবতা … সবাই সময়ের সাক্ষী হয়ে আছে । আমাদের লোকলস্কর দেখে চমকে ওঠে অনেকেই । আমরা নাট মন্দিরের পেছনে খুঁজে পাই এক ঝাঁক সেই আমলের ডাম্বেল্ । যাকে বলে মুগুর আরকি । দেখেই বুঝে যাই কারা সেই মুগুর অতীতে ভাজতও!! যা ডাম্বেল দেখলাম তাতে কেন সেই সময় হবেনা বাহুবলী ঘরে ঘরে !!
@@ কাক্ড়াঝোড় বনভূমি…
ঝাড়গ্রাম থেকে ৭৮ কিমি থেকে শুরু এই বনাঞ্চল । বৈশিষ্ট্য যদি বল সেভাবে কিছু নেই । কিন্তু কিছু ব্যাপার থাকে যা আলাদা করে দেয় সময় বিশেষে প্রকৃতি । পাতার মর্মর শব্দ অনেক সময় উদাসীন করে তোলে তলানিতে পড়ে থাকা মানুষকে । আমরা যখন ক্রস্ করছি তখন শীত নেমে এসেছে । একটা চাদর জড়িয়ে বসে আছে পথ জাগানো ২৩জন পথিকের পানে । এসব বলে বোঝানো যায় না । সঠিক কোন শব্দের ক্ষমতা থাকেনা সেই বর্ননাকে পরিবেষণ করার । তাই সেই চেষ্টা করার ইচ্ছেও নেই । কলকাতা রাইডারসের পক্ষ থেকে বলবো “ঘুরে আসো দু চাকায়” !!
@@ কালভৈরবের মন্দির…
অসাধারণ একটা অভিজ্ঞতা হল । প্রাচীন একটা মন্দির যদিও একদম অফ্বিট জায়গায় । আমরা একটা অদ্ভুত রাস্তা দিয়ে গেলাম । আসার সময় দেখছিলাম এখানের একটা জায়গার নাম “চাকাডোবা” । আর সত্যি চাকা ডুবে গেছিল “রাঙ্গা ধুলোয়” !! আর আমরা “পা টু মাথা” রাঙিয়ে নিয়ে মন্দিরে পা দিলাম ।লাল ধুলো ঝেড়ে নিলাম সমগ্র দেহ থেকে । কিন্তু মনে ততক্ষণে রং লেগে গ্যাছে । কেউ বলছে আরেকদিন থাকি কেউ বলছে এই রাস্তা সারাজীবন মনে থাকবে ।
মন্দিরটা শিবের । অদ্ভুর দর্শন । দেবতার মুখ দাঁড়িয়ে আছে একটা লৌহ দন্ডের উপর । বিগ্রহের শির লাল সিঁদুরে লেপা । চোখ দুটো অসম্ভব উজ্জ্বল যার দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে থাকা দুঃসাধ্য । জ্যোতি দেখালো “দ্যাখ দুই একদিন আগেই এখানে বলি হয়েছে” !! যে নিস্তব্ধতা ডিঙিয়ে এলাম তাতে করে কেউ যদি বলে এখানে ডাকাতরা পুজো করে এখানে । যে কেউ মেনে নেবে !! ফিরলাম আবার “রাঙ্গামাটির পথ” ধরে রাঙিয়ে নিয়ে নিজেকে শেষবারের মত !! শিলাজিত মনের ভেতরে গেয়ে উঠে —
“লাল মাটির সরানে
মন আমার রইলো পড়ে জাম বনে আর নদীর পাশে
নীল আকাশে
যেখানে ধুলোয় মাখা রইলো পড়ে তোর চিঠি ………”
@@ ঘাগ্রা ফলস্…
এসে ভাল লাগলো আবার খারাপ লাগলো । তার কারন অসম্ভব ভালো ফলস্ । কিন্তু এই ঝরনার পাগলামোটা যদি বৃষ্টির সময় দেখা যেত ??!! তখন রোহণ আর আমি বোধ হয় এটাই বলছিলাম ! ঝর্নার শব্দ রেকর্ডিং করতে পারলে ভাল হত । হল না !! কিন্তু বাঙালি যাবে কোথায়?? হৃদয়ে না লিখে প্রেমিকের নাম ভর্তি করে দিয়েছে ঝর্নার পাথরে পাথরে । একজন আবার আবেগের বশে কবিতা লিখে ফেলেছে দু কলম । কথাটা এমন ছিল—
“তুই আমায় পাগল বলিস্
তুই আমার পাগলী হবি…… !!
@@ দূরাসিনি বাঁধ……
নামটা উচ্চারণ করতে গিয়ে নজরুলের ওই গানে মত শোনাবে “ও দ্বীপ বাসিনী…দারুচিনিরও দেশে” !! জানিনা নামের মধ্যে বিয়োগের গন্ধ আছে কিনা…সেই লেখাটার মত “আমরা ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছি…চিঠির সাথে চিঠির দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে কেবল” !!
তখন কিন্তু কলকাতা রাইডার মাফ্লার জড়িয়ে নিয়েছে । চাপা ঠাণ্ডা আমাদেরকে সাবধান করতে শুরু করেছে । বাঁধের জল তখন বিপদ সীমার অনেক তলায় । স্বচ্ছ জলের ধারায় হেলান দিয়ে আছে সূর্য । পাহাড় শীতটা নিয়ে বসে আছে সূর্য পাটে গেলেই বিছিয়ে দেবে সমগ্র স্থলে । ভাললাগবে… ওই শান্ত পরিবেশকে । জল কথা বলবে যদি শুনতে চাও তার কথা । এগিয়ে আসবে অরন্য,পাহাড় সেই কথায় কান দিতে !!
@@ গুপ্তমনি দেবী মন্দির……
এই মন্দির দর্শনের কৃতিত্ব বোধ হয় মোসাটের । ও আমাদের সবাইকে দাঁড় করায় আর ওই জাগ্রত মন্দিরে নিয়ে যায় । চিত্র বিচিত্র দেব দেবির ছবি আর মূর্তিতে ঠাঁসা। দূর্গা মন্দির । গর্ভ গৃহটা প্রাচীনতার ছাপ । তবে অদ্ভুত লাগলো একটা জিনিস । সাধারণত কি হয় সুফি দরগায় বা মন্দিরে মান্ত করতে গিয়ে নানা রঙের দড়ি বেঁধে দেয় । আর এখানে বেঁধে দেয় ঘোড়া । ছোট বড় একটা বিশেষ জাতীয় ঘোড়া । ফোমের বা মাটির… প্রচুর । অনেকে খেয়াল করেনি সেটা । মন্দিরটা বেশ বিখ্যাত… কারন মানুষ তার মন বাঞ্ছা পূরণের জন্যে বাস থেকে পয়সা ছুঁড়ে দেয় ।
@@ ঘারগাসিনি—–
এই পাহাড়ের অনেক উপরে হেঁটে যেতে হয় । কেউ গেল আবার কেউ গেল না । কারন তোমাকে ট্রেক করে যেতে হবে । রোহণ ততক্ষণে চোখের বাইরে যেতে শুরু করেছে । ও ট্রেক করে আর প্রশিক্ষিতও । আমি, প্রসেন,শোভন জাম্বো তখন এগুচ্ছি । বেশ খাড়াই … অভ্যেস নেই তাই নাক মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস পড়ছে । রোহণ উঠে গেছে, আমরা একটু পড়ে পৌঁছে গেলাম । প্রথম মন্দিরে… একদম সহজ সাদামাটা মন্দির । কিন্তু চারপাশে দৃশ্য অসাধারণ আর গা হিম করা উচ্চতার জন্য! একদম উপরে শিব মন্দির । রোহণের সাহস পেয়ে পিছু নিলাম… আরও উপরের মন্দিরটার দিকে । হাপরের মত হাপাচ্ছি সবাই । সামনে তখন পুরো ঝাড়গ্রাম সংলগ্ন বনভূমি বিছিয়ে আছে তার প্রাকৃতিক সরলতা নিয়ে । মাইলের পর মাইল শুধু সবুজ । ওখানে তিনটে গুহা আছে । সেখানে পৌঁছোতে রীতিমত তোমাকে ঝুকি নিতে হবে । গুহা এক বছরে অনেক দেখেছি । আর তাছাড়া আমার কম বেশী অ্যাক্রোফবিয়া আছে । তাই আর ইচ্ছে করেনি… মন্দিরটা দেখলাম… বন্ধ তখন ছিল তাই কিছুটা হতাশ । আর কেউ এই মন্দিরের ইতিহাস জানে না দেখলাম !!
@@ আরও কিছু—–
দেখলাম বিভিন্ন উপজাতি মানুষকে যারা কত কষ্টে বেঁচে আছে… ওদের হাসি দেখলে আমাদের মত শহুরে মানুষ গুলোর হিংসে হবে । কেননা আমরা হাসতে ভুলে যাচ্ছি ক্রমশ ।ওদের থেকে এই পাঠটা আমরা নিতেই পারি !
দেখলাম “ডলডলি” আর “খাদারানী” লেকের ধারে কিছু লোধা সম্প্রদায়ের মানুষকে । দেখলাম “সারিধরম” ধর্মে দিক্ষিত কুরমি সম্প্রদায়ের মানুষ । যারা তাদের উপাস্য দেবতাকে বলে “গরম” !! দেখলাম ওদের আর সাঁওতালদের বিখ্যাত দেবতা মাড়াং বুরু” ! এদের পাতানাচ আর ঝুমুর নাচ দেখার সৌভাগ্য হল ।এখানে মকর সংক্রান্তিতে বিভিন্ন উৎসব হয় যেমন –ভাদ্নাপরম, মকর পরম । হয় ভাদু-তুসু নাচ ( শোনা যায় , ইংরেজরা তুসু নামক গ্রামের উপজাতি মেয়ে উপর অত্যাচার করতে গেলে সূবর্ণরেখায় ঝাঁপ দিয়ে নিজেকে বাঁচায় !!) দেখি লোধাদের বাড়ি । যদিও এরা যাযাবর শ্রেণীর জাতি । মূলত প্রকৃতি নির্ভর জীবন ওদের । পিঁপড়ের ডিমও ওদের খাদ্য !!( কৃতজ্ঞ স্বীকার “টি-কে মাহাতো” নামের মানুষটা । উনি বলেছেন এই ব্যাপার গুলো)
রাত একটার সময় আমি আর প্রতীক খাবার জল আনতে গ্যাছিলাম মাহাতো দার বাড়ি । উনার পরিবারের সাথে আলাপ করলাম মাঝ রাতে । অবাক হলে কিছু করার নেই আমার কিন্তু একদম তিন সত্যি !! অতিথির আপ্যায়ন কিভাবে করতে হয় আমাদেরকে মনে করিয়ে দিল । সামান্য ভ্রু কুঞ্চিত না করেই প্রতীককে কয়েকটা পাতা আর তামাক দিয়ে ওই মধ্যরাতে একটা অদ্ভুত সিগারেট তৈরি করে দিলেন উনার স্ত্রী । সেই ধুম-কাঠির নাম ছিল “চটা” !! উনি উনার মন্দিরের চাতালে কনক দেবী মন্দিরের বিগ্রহকে স্থাপন করেছেন । দেখলাম,ছবি নিলাম । বাঘের উপর বসে থাকা মায়ের মুখটা সরল । আশ্বাসের বা অভয় দিচ্ছে যেন আমাদের !! ছিমছাম,গোবরলেপা উঠোন । বহুদিন পর মামার বাড়ীর কথা মনে পড়ে গেল ।
জানলাম উনাদের মেয়ে রিয়া এবার মাধ্যমিকের টেস্টে ৬১ শতাংশ নাম্বার পেয়েছে । ওই মেয়েই সকাল বেলা ১০টা মত বোতলে জল ভরে দিয়েছে হাসি মুখে । একটা কিছু দেয়া উচিত ছিল ওই বাচ্চা মেয়েটাকে… কিন্তু তখন হাতে কিছুই ছিল না আমাদের দুজনের ঠোঁটের শুভেচ্ছাটুকু ছাড়া !!
রাতের বয়েস বেড়ে তখন ১.৪০টা !! ভাল লাগলো এই কিছুক্ষনের আলাপে এই সহজ “সরলতাকে” !!
এবার ফেরার পালা…… ঝাড়গ্রামের বাংলোতে !!
একটা ভোরে আমি আর জ্যোতি বেরিয়েছিলাম সে তো বললামই !! অসাধারণ পরিবেশ । ওই ভোরে পাখীর কলতান গাছে গাছে । লাল মাটি ধরে হেঁটে গেলাম বেশ খানিক । দেখলাম খেজুরের রস নামাচ্ছে দূরে । এই প্রথম খাঁচার বাইরে নীলকণ্ঠ পাখী দেখলাম দুজনে । মানুষের মন ভোরে সুন্দর থাকে । তারপর বেলা বাড়ার সাথে সাথে কমতে থাকে প্রতিটি মানুষের সৌন্দর্য !! ফেরার সময় জন ডেনভারের সাহেবের গানের মত রোদ পিঠে নিয়ে ফিরলাম দুজন… “ sunshine on my shoulder makes me happy…”
সন্ধ্যায় একটা প্রত্যন্ত লাল মাটির দেয়াল সর্বস্ব দোকানে মিষ্টি আর তেলে ভাজা খাই আমরা সবাই । একটু বিস্তারিত বলি জায়গাটা !! আমার মত অনেকেই ওই দোকানে ঢুকতে কিন্তু কিন্তু ভাব নিয়েছিল । কে যেন সাহসে ভর করে অর্ডার দেয় শিঙাড়া আর চপ । আমি খাবো, কি খাবো না সেটা চোখ দিয়ে মাপছি । কেননা চপের রংটা সন্দেহজনক । একটায় কামড় দিয়ে ভুল ভাঙলো । চপ খেলাপ ১টা, ৩টে শিঙাড়া । সবাই এক বাক্যে স্বীকার করলো শিঙাড়াটা “অস্থির” খেতে । এবার মিষ্টি খেলাম… একটা সাদা রসগোল্লা আর একটা পানতুয়া । রসগোল্লা খেয়ে সুব্রত,বড়ুয়া, সৌমেন তো ফিদা । আমার সাহস বেড়ে গেল এবার নিলাম গুড়ের রসগোল্লা … !! বহুদিন এমন গুড়ের রসগোল্লা খাই নি । খাঁটির থেকেও খাঁটি …। বাধ্য হয়ে সেই দোকানের মালিকের সাথে কথা বললাম…আমি আর সায়ন ওনাকে সাথে করে গেলাম ওদের কারিগরকে দেখতে আর গুড়ের রসগোল্লার প্রস্তুতি দেখতে । মাথা নষ্ট ম্যান… আবার দুটো খেলাম কড়াই থেকে । আহা সাধু সাধু… !! কারিগরের নাম “ অজয় দেবগণ” !! মিথ্যে নয়, সায়নকে জিগ্যেস করতে পারো ।
রাতে একদম সদ্য পেড়ে আনা মহুয়া এসে হাজির । সবাই একছিলিম করে খেলো । আমি আঙ্গুল চুবিয়ে ঠোঁটে ছোঁয়ালাম । কেননা আমার পাকস্থলী অ্যালকোহল নিতে পারে না… বমি করে সাবধান করিয়ে দেয় ! আঙ্গুল ডুবিয়ে ঔষধির মত জিভে এক ফোঁটা দিতেই কেঁপে উঠি । তড়িঘড়ি মুখের সাধ চ্যাঞ্জ করতে আমি মোসাটের কাছে এগিয়ে যাই আর দেবুদার চানাচুরের প্যাকেটে কিস্মিস্ খুঁজি । তারপর আড্ডা দেই উল্লাট ।!!
তারপর আর কি… ফেরার আগের রাতে শুনতে হয় জ্যোতির সেই কুখ্যাত ঘুমতাড়ানি গান । বড়দিনের গান…শিশু কণ্ঠে গাওয়া সান্টাকে উদ্দেশ্য করে “জিঙ্গেল বেলোয়া,জিঙ্গেল বেলোয়া”…… দেবুদা সহ আমাদের সবার অবস্থা “প্লিজ,তুই বন্ধ কর জ্যোতি” 😛 । সুরটা ছিল বিহারী গানের চিরাচরিত সুর আর ইনোসেন্ট !!
আমাদের সকাল হতেই আমরা রাতের সেই জিঙ্গেল গান শুনতে বসি । সবাই চাইছিল গানটা শুনতে… ভীষণ আদুরে গলায় এক বিহারী বাচ্চা সান্টার কাছে তার চাহিদা জানাচ্ছে ।
চা-টা খেয়ে আবার প্রতীকের ঘাড়ে চাপি । আর মিটি মিটি হাসি এই ভেবে যে প্রতীকের অবস্থা সেই বেতালের বিক্রমাদিত্যের মত J । না পারছে রাখতে আমাকে কোথাও, না পারছে ছেড়ে যেতে J । চেপে বসে আছি আর এভবেই পৌঁছোই বাড়ি অব্দি !!
আর শেষে ধন্যবাদ দুজন মানুষকে । যে দুজনের মধ্যে একজন যার ভুমিকা ছিল “লিড্” নেয়া । যে ১৭টা বাইককে একসারিতে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে । আর যে শেষ থাকা “রাখাল” যে দলটাকে হ্যাট হ্যাট করে এগিয়ে দিচ্ছে গন্তব্যের দিকে । কেননা —
“The speed of the boss is the speed of the team” ………… কিন্তু পেছনে থেকে করডিনেট করাও খুব দরকার যা আমাদের সময়ের সৎ ব্যবহার করতে প্রচন্ড সাহায্য করেছে !!
অসাধারণ একটা রোড ট্রিপের সুযোগ দিল আমার বন্ধু আর কলকাতা রাইডার্স্ । কৃতজ্ঞ থাকবো সবার কাছে । এত বছর আমি কেবল অন্যের মুখের ঝাল খেয়েছি যে বাইকার ট্রিপ এমন , বাইকার ট্রিপ অমন আর পড়ে গেছি বিভিন্ন ব্লগ । এবার আমি চাক্ষুষ হলাম … গতির একটা অংশ হিসেবে নিজেকে সমৃদ্ধ করলাম !! আর যদি আবার কখনও পকেট-সময়-সারথি পাওয়া যায় সেই বিক্রমাদিত্যের মত,তাহলে আবার যাবার ইচ্ছে থাকবে 😛 কারন দুই চাকাতে “না” আছে আমার!! নইলে যাওয়া হবে না কোনদিন …আশা করি আবার যাবার সুযোগ হবে কলকাতা রাইডারস্দের সাথে ! কোন বন্ধু ঘাড়ে তুলে নেবে আমাকে বিক্রমাদিত্যের মত (প্রতীক-জ্যোতি তো রইলই) !! কবে হয় এখন সেটাই দেখার !
প্রাপ্তির ঝুলি অনেক আমার… “গতি- -নতুন বন্ধুত্ব-উপজাতীয় সরলতা –প্যাশন-প্রকৃতি -লাল মাটি –প্রাচীনতা-পাহাড় আর কলকাতা রাইডারস্” !!
সুমনের একটা গান মনে পড়ে গেল—
“কতটা পথ পেরুলে বন্ধু বলা যায়
কতটা পথ পেরুলে পাখী জিরোবে তার ডানা
প্রশ্নটা তো সহজ আর উত্তরও তো জানা”……
প্রায় ৫০০ কিমি যথেষ্ট আশা করি বন্ধু হতে… কি বল ??
অনেকের নাম মনে পড়ছিল না লেখার সময়…যেমন মুন্নার নাম এখন মনে পড়লো! তাই নাম না বলে ২৩ জনকে ধন্যবাদ… আমাকে সহ্য করার জন্য !
ভ্রমন কাহিনী টা পড়ে দারুন লাগলো। ধন্যবাদ।
,আমার খুব ইচ্ছে একবার বাইক টুরে যাবার।
Very nice article, totally what I needed.
Feel free to surf to my blog … Christin
I savour, lead to I discovered exactly what I used to be taking a look for.
You’ve ended my four day long hunt! God Bless you man. Have a nice day.
Bye
NASA might still be engaged in litigation 40 years
later. If an individual attend the same trade show every year whenever it’s time to
book transaction and look at whether or not you’ll employ the smaller stand space.
When we start losing faith in something or on someone and seek control over things, all we crave for is maximum resources.
Awesome…….